দেশের বেশিরভাগ এলাকাজুড়ে বয়ে চলা মৃদু থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে আরো তিন দিনের সতর্কবার্তা জারি করেছে আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, রোববারের মত সোমবারও তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। তবে মঙ্গলবার থেকে তাপমাত্রা ফের বাড়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।
“আকাশে মেঘ আছে, তাই সামান্য কমতে পারে তাপমাত্রা; কালকে থেকে আবার বাড়বে৷ সিলেট, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রামে হালকা বৃষ্টি হতে পারে৷ এছাড়া অন্য জায়গায় বৃষ্টির তেমন সম্ভাবনা নেই৷”
চলমান তাপপ্রবাহ আরো ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, “বাতাসে জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে এ সময় গরমে অস্বস্তি বাড়তে পারে। সপ্তাহখানেক পর বড় ধরনের ঝড়বৃষ্টি হলে জনজীবনে স্বস্তি মিলতে পারে৷”
চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় শনিবার; সেদিন যশোরে থার্মোমিটারের পারদ উঠেছিল ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আর ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
রোববার তাপমাত্রা সামান্য কমলেও তাপপ্রবাহের বিস্তার বেড়ে ছড়িয়েছে ৫১ জেলায়। রোববার চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সোমবার সকালে আবহাওয়ার বুলেটিনে বলা হয়েছে, পাবনা ও চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তীব্র তাপপ্রবাহ বইছে রাজশাহী, টাঙ্গাইল, যশোর ও কুষ্টিয়ার ওপর দিয়ে।
এর বাইরে মৌলভীবাজার, চাঁদপুর জেলাসহ ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশ এবং রংপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। রোববার সারাদিনই এই ধারা চলতে পারে।
দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমার সম্ভাবনা থাকলেও রাতের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
বাতাসে তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম হলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ ধরা হয়। ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রাকে বলা হয় মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রাকে তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়। আর তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রির উপরে উঠলে তাকে বলা হয় অতি তীব্র তাপপ্রবাহ।
এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে তাপপ্রবাহ শুরু হয়। শনিবার তা কয়েক জেলায় অতি তীব্র তাপপ্রবাহের রূপ পায়।
তীব্র গরমের কারণে স্কুল-কলেজে সাত দিনের ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে ক্লাস চালানোর সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে।
প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস অবস্থার মধ্যে রোববার মেহেরপুর, সিলেট ও নরসিংদীতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার মৃত্যু হয়েছিল অন্তত দুইজনের। হিট স্ট্রোকে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে চিতিৎসকদের ধারণা।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সোমবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা ও ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃদ্ধি হতে পারে। দেশের বাকি অংশে আকাশ আংশিক মেঘলা এবং আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। মঙ্গল ও বুধবার তাপমাত্রা বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকতে পারে।