কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর গণহত্যা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করে এ নিয়ে আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গণমাধ্যমে গতকাল পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘চাকরির ক্ষেত্রে বৈষম্যবিরোধী কোটা সংস্কারের দাবিতে শত শত নিরীহ ও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাখির মতো গুলি করে গণহত্যা করা হলো, যা দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছে। এ হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর আহ্বান জানাচ্ছি।’
বিবৃতিতে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমানসহ (পার্থ) গত কয়েক দিনে দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান মির্জা ফখরুল। তিনি অভিযোগ করেন, ‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসকে আড়াল করতে এবং উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর অপকৌশল হিসেবে বিএনপির নির্দোষ নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। নেতাকর্মীদের বাসায় না
পেয়ে তাদের সন্তান অথবা পরিবারের সদস্যদের গ্রেফতার ও অশালীন আচরণ করাসহ ঘরের আসবাব ভাংচুর করা হচ্ছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আন্দোলনে ভূমিকা রাখার মিথ্যা অভিযোগে ঢালাওভাবে বিএনপি ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের দোষারোপ করছে সরকার ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় সদস্য। যদি তা-ই হয়, তাহলে তাদের ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করা হয়নি কেন? এটাই জনগণের প্রশ্ন। এতে প্রমাণিত হয় যে বিএনপি কিংবা বিরোধী দলের কেউই আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত নয়।’
শুধু ছয় হত্যার তদন্ত পুরো হত্যাকাণ্ডকে ধামাচাপা দেয়ার নামান্তর মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘শত শত নিরীহ ছাত্রছাত্রীদের সরকারি দলের সন্ত্রাসী ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা হতাহত করল। অথচ সরকারের ইশারায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি শুধুমাত্র ছয়জনের হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করবে, যা সুকৌশলে পুরো হত্যাকাণ্ডকে ধামাচাপা দেয়ারই নামান্তর। তাই জনগণ পুরো ঘটনা ও হত্যাকাণ্ড নিয়ে আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি করে। নইলে ব্যর্থতার সব দায় নিয়ে অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ করা উচিত বলে জনগণ মনে করে।’
সরকার তার নিজস্ব বাহিনী দিয়ে রাষ্ট্রীয় স্থাপনাগুলোর ক্ষতি করেছে বলে বিবৃতিতে দাবি করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘এ ক্ষতিসাধনের মধ্য দিয়ে একদিকে সরকার দুর্নীতির পথ প্রশস্ত করেছে। অন্যদিকে জনগণ ও বিশ্ববাসীর কাছে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে হেয়প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে বিরোধী মতের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও নির্যাতনের পথ তৈরি হয়েছে, যা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে বোঝা যায়।’