হটাথ রাত দুপুরে পদত্যাগের ঘোষণা। এ যেন বিদ্যুতের চমক। জোর করে যাদেরকে ক্ষমতা থেকে সরানো যায়না তারাই কিনা নিজে থেকে পদত্যাগ করেছেন। তাও আবার মধ্য রাতে। নানা বিতর্কে জর্জরিত দেশের ইকমার্স খাতের সংগঠন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব)। সংগঠনটির কার্যনির্বাহী কমিটির বিরুদ্ধে নির্বাচন নিয়ে প্রতারনা, ক্ষমতা কুক্ষিগত করে আকড়ে রাখা, সদস্যদের মতামত অগ্রাহ্য এমনকি বাস্তবে কোন ইকমার্স ব্যাবসায়ী না হয়েও সংগঠনের ইসি কমিটিতে থাকাসহ বহু অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
এরই মধ্যে ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানে বিতর্কিত অবস্থানের কারণে কিছু সদস্যের প্রতিবাদের মুখে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে গত ১৩ আগষ্ট ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সার পদত্যাগ করেন। এরপর থেকে সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি সাহাব উদ্দিন শিপন।
শমী কায়সার পদত্যাগ করলেও ইসির বাকী সদস্যরা থেকে যান বহাল তবিয়তে। এবার এবার ইসি কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন সংগঠনটির ৯ সদস্য। পদত্যাগকারীরা হলেন- ভাইস প্রেসিডেন্ট সাইয়েদা আমবারিন রেজা, সাধারণ সম্পাদক নাসিমা আক্তার নিশা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খন্দকার তাসফিন আলম, ফাইন্যান্স সেক্রেটারি আশিফ আহনাফ, পরিচালক আব্দুল ওয়াহেদ তমাল, কর্পোরেট অ্যাপেয়ার্স পরিচালক শাহরিয়ার হাসান, কমিউনিকেশন অ্যাপেয়ার্স পরিচালক মো. সাঈদুর রহমান, গভর্নমেন্ট পরিচালক মোহাম্মদ ইলমুল হক এবং পরিচালক মোহাম্মদ অর্নব মোস্তফা।
জানাগেছে, এদের মধ্যে ৯ জনই পদত্যাগ পত্র দিয়েছেন হোয়াটসঅ্যাপে। প্রথমে বৃহস্পতিবার সকালে দেশের বাইরে থেকে দায়িত্ব পালনে অক্ষম হওয়ার কারণ দিখিয়ে পরিচালক পথ থেকে পদত্যাগের কথা জানান প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আব্দুল ওয়াহেদ তমাল। এরপর মধ্যরাতে হোয়াটসঅ্যাপে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে গ্রুপ কলে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাহব উদ্দিন শিপনকে বিষয়টি অবহিত করেন আম্বারিন রেজা। এসময় ওই কলে আরো ৪জন ইসি সদস্য ছিলেন।
জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শিপন জানিয়েছেন, ফেনী থেকে বন্যা দুর্গত এলাকায় ত্রাণ কাজ পরিচালনার সময় রাত ১২টার দিকে একে একে পদত্যাগপত্র আসতে থাকে। তবে কাজের মধ্যে থাকায় তা তাৎক্ষণিক দেখা হয়নি। পরে গ্রুপ কলে পদত্যাগের কথা জানতে পারেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ জুলাই-ক্যাব কার্যনির্বাহী কমিটির ২০২৪-২৬ মেয়াদের নির্বাচন হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে তৎকালীন সরকার কারফিউ ঘোষণা করায় ভোট স্থগিত করা হয়। নির্বাচনে ১১ পরিচালক পদে প্রার্থী ছিলেন ২৪ জন। এরমধ্যে পদত্যাগকারীরা অগ্রগামী প্যানেলের হয়ে প্রচার-প্রচারণা চালান। বাকিরা স্বতন্ত্র্য ছিলেন। কিন্তু দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে ই-ক্যাব অফিসে সাধারণ প্রার্থীসহ কয়েকজন ই-ক্যাব সদস্যের ক্ষোভ প্রকাশের পর সংগঠনের কয়েকজন সদস্যের রাজনৈতিক মতাদর্শ ও কার্যক্রম নিয়ে ঘোরতর আপত্তি তোলা হয়। এমন পরিস্থিতিতে ই-ক্যাব অফিস কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। এসময় বেশ কয়েকজনের পদত্যাগ চেয়েছিলো ক্ষুব্ধরা।