আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ এনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, শেখ হাসিনাসহ দলটির নেতাকর্মীরা দেশের টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করেছেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সেই টাকা ফিরিয়ে এনে জনগণের উন্নয়নে ব্যয় করতে হবে।
শুক্রবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় নারায়ণগঞ্জের ওসমানী পৌর স্টেডিয়ামে জেলা ও মহানগর জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে আয়োজিত জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “নারায়ণগঞ্জের মানুষ এতদিন অনেক কষ্টে ছিল। এ শহরকে সন্ত্রাসের রাজধানী বানিয়ে রাখা হয়েছিল। আমাদের তৎকালীন জামায়াতের আমির গোলাম আযমের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জে ৭২ ফিট লম্বা ব্যানার টাঙিয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এক গডফাদার ডিসি-এসপির উপস্থিতিতে বলেছিলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে খুনের অগ্রিম মামলা করে রাখেন।’ শেষ পর্যন্ত সরকারের জুলুমের শিকার হয়ে গোলাম আযম মারা যান।”
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়ে জামায়াত আমির বলেন, “গডফাদারের সুযোগ হয়েছিল। আজ তিনি কোথায়? এত অহংকার, দাম্ভিকতা ভালো না। সন্ত্রাসকে কখনো প্রশ্রয় দেওয়া উচিত নয়, কারণ দুনিয়াতে তার পরিণতি করুণ হয়। আখিরাতেও তার জন্য ভয়াবহ শাস্তি অপেক্ষা করছে।”
জাতীয় ঐক্যের অভাবের জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “গত ৫৪ বছর জাতিকে বিভক্ত করে রাখা হয়েছে, যা সুকৌশলে শুরু করেছিল আওয়ামী লীগ। পাহাড়িদের নিয়ে বিভক্তির সূচনা করে তারা বলেন ‘আমরা সবাই বাঙালি’, যা পাহাড়িরা মেনে নেয়নি। এই বিভক্তি এখনো চলমান এবং পাহাড়িরা নিজেরাই সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে। যতদিন বিভক্তি থাকবে, ততদিন জাতির ঐক্য সম্ভব নয়।”
নারায়ণগঞ্জ মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর আমির মুহাম্মদ আব্দুল জব্বারের সভাপতিত্বে আয়োজিত সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, ঢাকা অঞ্চল দক্ষিণের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মোবারক হোসাইনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
বক্তারা সরকারের দমননীতির সমালোচনা করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আহ্বান জানান এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য সরকার গঠনের দাবি জানান।