বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে এক বৈঠকে অংশ নিয়ে জানিয়েছে যে, তারা জরুরি নির্বাচন সংস্কার শেষ করেই জাতীয় নির্বাচন চায়। একই সঙ্গে দলটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনেরও আহ্বান জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে জামায়াত নেতারা প্রায় দুই ঘণ্টা আলোচনা করেন। একযুগ পর দলটি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করলো। সর্বশেষ ২০১২ সালের ডিসেম্বরে তারা ইসির সঙ্গে বৈঠক করেছিল।
সংস্কার ছাড়া নির্বাচন নয়
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বৈঠক শেষে বলেন, “সংস্কার ছাড়া কোনো নির্বাচন নয়” (No Election Without Reforms)। নির্বাচনি প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জরুরি বিষয়গুলো সংস্কার করেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে হবে। তিনি আরও জানান, তারা ২৩টি সুপারিশ উপস্থাপন করেছেন, যার মধ্যে অন্যতম হলো পেশিশক্তির প্রভাবমুক্ত নির্বাচন নিশ্চিত করতে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (PR) ব্যবস্থা চালু করা।
স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে চায় জামায়াত
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তাব দিয়ে গোলাম পরওয়ার বলেন, “জনগণের আকাঙ্ক্ষা স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে হোক। জনগণ চায় স্থানীয় সরকার সচল হোক। আমরাও চাই আগে স্থানীয় নির্বাচন হোক।” তবে বিএনপির এ বিষয়ে মন্তব্য নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি তিনি।
ভোট বাতিলের ক্ষমতা ও প্রবাসী ভোটারদের অধিকার
জামায়াত নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়ে বলেন, অনিয়মের কারণে ভোট আংশিক বা সম্পূর্ণ বাতিলের ক্ষমতা ইসিকে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত। এছাড়া, প্রবাসী ভোটারদের ভোটাধিকার নিশ্চিতেরও সুপারিশ করা হয়েছে। সরকারি চাকরিজীবীদের অবসরের তিন বছর পূর্ণ না হলে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিধান চালুর প্রস্তাব দিয়েছে দলটি।
নিবন্ধন আইন বাতিলের দাবি
জামায়াতের দাবি, রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের কঠিন শর্ত আরোপ করে রাজনৈতিক অধিকার খর্ব করা হয়েছে, যা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। গোলাম পরওয়ার বলেন, “দল হলেই নির্বাচন করতে পারবে, নিবন্ধনের প্রয়োজন নেই। ২০০৮ সালের আগে নিবন্ধন আইন ছিল না, এখন এটি বাতিল করা উচিত।” তবে বৈঠকে জামায়াতের নিবন্ধন বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলে তিনি জানিয়েছেন।
জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি দলে ছিলেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ, নির্বাহী পরিষদের সদস্য মতিউর রহমান আকন্দ, প্রকাশনা ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট জসিমউদ্দিন সরকারসহ অন্য নেতৃবৃন্দ। দলটি ৩০০ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন গোলাম পরওয়ার।