প্রতিমন্ত্রী পদ হারানো জামালপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ হাসান রাজধানী ঢাকায় যে ফ্ল্যাটে থাকেন তার বাজার মূল্য প্রায় চার কোটি টাকা। এক হাজার ৮০০ বর্গ ফুটের বিশাল আয়তনের ফ্ল্যাটটিতে সপরিবারে বসবাস করে আসছেন তিনি।
বুধবার ধানমন্ডির ১৫ নম্বর (সাবেক ২৮ নম্বর) সড়কের ভবন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
ভবনটির নিরাপত্তাকর্মীরা জানান, পরিবার নিয়ে ভবনের চার তলায় থাকেন মুরাদ হাসান। এটি এক হাজার ৮০০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট।
পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক ভবন সংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তি জানান, ওই ভবনটির ফ্ল্যাট কিনতে খদ্দেরকে প্রতি বর্গ ফুটের জন্য গুনতে হয়েছে ২২ হাজার টাকা। সে হিসেবে এক হাজার ৮০০ বর্গ ফুটের ওই ফ্লাটটির দাম দাঁড়ায় তিন কোটি ৯৬ লাখ টাকা।
ভবন সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, একই ভবনের দ্বিতীয় তলায় আরও একটি ফ্লাট রয়েছে মুরাদ হাসানের। যা তিনি নিজের অফিস হিসেবে ব্যবহার করেন। সেটির আকার এবং দামও একই।
সম্প্রতি নানা বেফাঁস মন্তব্যের কারণে আলোচনায় ছিলেন মুরাদ হাসান। এর মধ্যেই এক নারীকে অবমাননা করে বক্তব্য ও একজন চিত্রনায়িকার সঙ্গে প্রতিমন্ত্রী মুরাদের কুরুচিপূর্ণ ফোনালাপ ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে এলে গত সোমবার রাতে তিনি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের মাধ্যমে মুরাদকে মঙ্গলবারের মধ্যে পদত্যাগের নির্দেশ দেন। মঙ্গলবার দুপুরে তিনি ই-মেইলে পদত্যাগপত্রটি মন্ত্রণালয়ের সচিবের দপ্তরে পাঠান। পরে তার জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের পক্ষে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দপ্তরে পদত্যাগপত্র জমা দেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে তার একান্ত সচিব মাহমুদ ইবনে কাসেম পদত্যাগপত্রটি গ্রহণ করেন। পরে সেটি সারসংক্ষেপ আকারে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এরপর সেটি যায় বঙ্গভবনে।
পদত্যাগের পর তাকে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের পদ থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সভায় তাকে দলের সব পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তার সংসদ সদস্য পদও থাকবে না বলে সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে ওই ফোনালাপ প্রকাশের পর থেকেই আত্মগোপনে রয়েছেন তিনি। তিনি বর্তমানে কোথায় রয়েছেন তা জানা যাচ্ছে না।