দুর্নীতি করে কেউ পার পাবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন। তিনি বলেছেন, আমরা থেমে নেই। দুর্নীতিবাজদের ধরতে আমাদের এনফোর্সমেন্ট টিম ২৪ ঘণ্টা তৈরি থাকে।
বৃহস্পতিবার বিকালে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। এদিন সংস্থাটির এনফোর্সমেন্টের চলমান অভিযান, অনুসন্ধান ও তদন্ত বাড়ানোসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন দুদক সচিব।
দুদকের কর্ম পরিধির বিষয়ে দুদক সচিব বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর বিভিন্ন ধারায় যে ক্ষমতা বা দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সে মোতাবেক দুদকের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
সেবা খাতে দুর্নীতি প্রতিরোধের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেবা খাততো আমাদের জীবন যাত্রার বাইরের না। যেকোনা বিষয়ে অনিয়ম হলে আমাদের এখানের এনফোর্সমেন্ট টিম ২৪ ঘণ্টা তৈরি থাকে। যেকোনো অভিযোগ পাওয়ার পর আমার যাচাই করে দেখি। যদি এখানে দুর্নীতি বা অনিয়ম হওয়ার সম্ভাবনা থেকে থাকে আমরা তাৎক্ষণিক আমাদের অভিযান পরিচালনা করা হয়।
তিনি আরও বলেন, অভিযানের ক্ষেত্রে কখনো মামলা, কখনো প্রয়োজন হলে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে এনফোর্সমেন্ট টিম। বিধানের আলোকে আমাদের যা করণীয় আমরা সেটা করে থাকি। সবকিছুর বিষয়ে দুদকের সর্বদা নজর থাকে।
দেশের জরুরি সেবা খাতে অনিয়ম হলে আগে গ্রেপ্তার বা মামলা করা হতো। এখন সেটা কমেছে কি না- এমন প্রশ্নে মাহবুব হোসেন বলেন, ২০২০ সাল থেকে আমরা পেন্ডামিক সিচুয়েশন অতিক্রম করছি। সেক্ষেত্রে তথ্য উপাত্ত না পাওয়ারে কারণে বিলম্ব হতে পারে।
আগের চেয়ে গ্রেপ্তারে পরিমাণ কমেছে, এই ক্ষেত্রে দুদকের ওপর কোনো ধরনের চাপ আছে কি না জানতে চাইলে দুদক সচিব বলেন, কোনো ঘটনা যদি কোথাও ঘটে, প্রথম তথ্য পাওয়ার পর, যাচাই বাছাই করি কীভাবে কাজ করতে হবে। আমাদের সব কিছু তৈরি করা আছে। তথ্য প্রাপ্তির সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এখন আমরা থেমে নেই। কোনো কারণে থামার কোনো সম্ভাবনা নেই।
তিনি আরও বলেন, আমাদের টোল ফ্রি যে নাম্বারটা রয়েছে ১০৬, এই নাম্বারে গত ২০২০ ও ২০২১ সালে ১ লাখ ১৩ হাজার ৭৭৩টি কল এসেছে। এর মধ্য থেকে ২ হাজার ৪৪৯ টি অভিযোগ আমলে নিয়ে কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। কেউ যদি দুর্নীতি করে থাকে বা অনিয়ম করে থাকে আমাদের বিধান মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
দুদক প্রতি বছর বিভিন্ন বিষয়ে সুপারিশ করে থাকে, পরে সেসবের ফলোআপ কী হয় এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, গত দুই বছর অর্থাৎ ২০২০ ও ২০২১ সালে দুদক ১ হাজার ৫৪টি পত্র পাঠিয়েছে। সেই পত্র পাঠানো হলে সংশ্লিষ্ট বিভাগ, মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তর ফেলে রাখে তা না। তাদরেকে তথ্য উপাত্ত বের করতে সময় দিতে হবে। আমাদের দুদক কার্যালয় থেকে আমার সেটা মনিটর করি। আমরা চিঠি দিলাম তারা চুপ হয়ে থাকে বিষয়টা এমন না।
দুদকের গ্রেপ্তার অভিযান কমে যাওয়ার বিষয়ে সচিব বলেন, শুধু দুদক প্রধান কার্যালয় না, আমাদের বিভাগ রয়েছে ৮টি, উপজেলা জেলা সব জায়গাতেই দুদকের কার্যক্রম দেখতে পাবেন। দুদক বসে নেই, দুদকের কার্যক্রম চলছে। একটু অপেক্ষা করেন।
এছাড়া ফাঁদ মামলার বিষয়ে দুদক সচিব বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের একটা ধারা অনুযায়ী ফাঁদ মামলা করা হয়, ফাঁদ মামলা অব্যহত রয়েছে। দেশের জনগণ যে যে পর্যায়ে রয়েছেন সকলের সহযোগিতা কামনা করি।
সর্বশেষ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর বিষয়ে সবিচ বলেন, তার কাছে যে সেব তথ্য উপাত্ত চাওয়া হয়েছে। তিনি সবকিছু দুদকে জমা দিয়েছেন। দুদক কর্মকর্তারা সেসব কাগজপত্র পরীক্ষা করে দেখছে।