টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে টাইগারদের ভরাডুবির পর বাংলাদেশ ক্রিকেটে বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছে। আগামীকাল শুক্রবার শুরু হওয়া পাকিস্তান সিরিজে বাদ পড়েছেন সৌম্য সরকার-লিটন দাশ, চাকরিচ্যুত হয়েছেন ফিল্ডিং কোচ রায়ান কুক। থাকছেন না সাকিব-তামিম-মুশফিকের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা। দলে যোগ দিয়েছেন বেশ কিছু তরুণ মুখ। আর অনভিজ্ঞ এই নতুনদের নিয়ে বিশ্বকাপের হতাশা ঘোচানোর মিশনে নামতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
শুক্রবার মিরপুর শের-ই বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শক্তিশালী পাকিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামবে মাহমুদউল্লাহ বাহিনী। এদিন দুপুর দুইটা থেকে শুরু হবে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজটির প্রথম ম্যাচ। বিশ্বকাপ ব্যর্থতাকে অতীতের ব্যাপার বানিয়ে পাকিস্তান সিরিজেই সম্পূর্ণ মনোযোগ দিতে চান মাহমুদউল্লাহ।
নেতিবাচক প্রভাব এড়িয়ে পাকিস্তান সিরিজে চোখ রাখা টাইগার অধিনায়ক ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘বিশ্বকাপ নিয়ে কথাই বলতে চাচ্ছি না। আমি এখন পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দিকে মনোযোগ দিতে চাচ্ছি। যেটি অতীত, সেটি মনে আসতে দিলে বরং নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।’
বিশ্বকাপে চরম ব্যর্থতার স্মৃতিতে নেতিবাচক প্রভাব আসার কথাই! টানা ৬ষ্ঠবারের মতো বিশ্বকাপের মূলপর্বের সবগুলো ম্যাচই হেরেছে বাংলাদেশ। বাছাইপর্বে স্কটল্যান্ডের কাছে হারের পর শঙ্কা ছিল মূলপর্বে ওঠা নিয়েও। তবে বিশ্বকাপে টাইগার ক্রিকেটে এমন ব্যর্থতার কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন ঘরের মাঠে স্পিনিং উইকেটে খেলা।
পাকিস্তানের বিপক্ষে শুরু হতে যাওয়া সিরিজের উইকেট এবং সম্ভাবনার ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘উইকেট ভালোই মনে হলো। আমি আশা করি এটা ভালো উইকেট হবে। হ্যাঁ এটা অবশ্যই ওয়ার্ল্ডকাপের পর আমাদের বড় একটা চ্যালেঞ্জ এই সিরিজে ভালো ক্রিকেট খেলার এবং সামর্থ্যের প্রমাণ দেওয়ার জন্য ভালো একটা সুযোগ।’
শক্তিশালী পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলে অভিষেক হতে পারে সাইফ হাসান ও ইয়াসির আলীর। দলে ওপেনিংয়ে নাইম শেখের সঙ্গী হতে পারেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ বাংলাদেশ সাত ব্যাটসম্যান খেলাতে পারে।
সাকিব আল হাসান না থাকায় সেখানে বাড়তি দায়িত্ব পালন করতে হতে পারে মেহিদী হাসান ও নাসুম আহমেদকে। মিডলে দায়িত্ব পালন করবেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ এবং আফিফ। কিপিংয়ে যথারীতি বিশ্বকাপে ব্যর্থ নুরুল হাসান সোহানকে রাখতে পারে টিম ম্যানেজমেন্ট।
পাকিস্তান বিশ্বকাপ দল থেকে বিশ্রামে রাখা হয়েছে আসিফ আলী ও ইমাদ ওয়াসিমকে। সেখানে সুযোগ পেয়েছেন খুশদিল শাহ ও মোহাম্মদ নওয়াজ। এদিকে ম্যাচের আগে কালই ১২ সদস্যের তালিকা প্রকাশ করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড।
সফরকারীদের অন্যতম ওপেনিং জুটি বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান এদিনও শুরুটা করবেন। আইসিউ থেকে ফিরে পুরো সুস্থ হয়ে উঠেছেন রিজওয়ান। দলে থাকছেন অভিজ্ঞ শোয়েব মালিক। বোলিংয়ে শাহিন শাহ আফ্রিদিকে সঙ্গ দিবেন হারিস রউফ ও হাসান আলি। এদিন বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের ত্রাসের কারণ হতে পারেন লেগ স্পিনার সাদাব খান।
এদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী দল হলেও বাংলাদেশে পাকিস্তানেরও সমর্থক রয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম। তিনি বলেন, ‘কোভিডের পর এখানে প্রথমবার দর্শক প্রবেশের অনুমতি মিলেছে, এটা দারুণ ব্যাপার। ক্রিকেটার হিসেবে, দল হিসেবে আমরা উপভোগ করবো এবং বাংলাদেশে আমরা যখনই এসেছি, দর্শক সবসময় আমাদের উৎসাহ দিয়েছে। শুধু নিজেদের দলই নয়, পাকিস্তান দলকেও ওরা সমর্থন করেছে বেশ। এটা আমাদের বেশ ভালো লাগে এবং সহায়তাও করে।’
নিজেদের নিজেদের ভালো ফলের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চান পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজম। ‘সিরিজ ধরে ধরে মনোযোগ দিতে হবে। বিশ্বকাপে এবার ইতিবাচক যেটা মিলেছে, আমাদের দল একতাবদ্ধ হয়ে খেলেছে। আমাদের ছেলেরা যেভাবে সাড়া দিয়েছে, যতটা আত্মবিশ্বাস মিলেছে, চেষ্টা থাকবে তা ধরে রাখার।’