বাংলাদেশ ভ্রমণে নিজের অভিজ্ঞতার নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে একান্ত আলোচনা করেন রাশিয়ার সাংবাদিক, লেখক ও ব্লগার মি. জর্জি জ্যোতভ। আজ রবিবার সেগুন বাগিচায় একটি রেস্ট্ররেন্টে তিনি তার বাংলাদেশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। সে সময় আরো উপস্থিত ছিলেন রাশিয়ান হাউস ইন ঢাকার পরিচালক মি. মাক্সিম দোবরোখোতরভ এবং সিআইএস বিসিআইসির কো চেয়ারম্যান ও গ্লোবাল এক্সপ্লোর লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এইচ এম সাঈফ আলী খান।
জর্জি জ্যোতভ এক সপ্তাহের ভ্রমণে বাংলাদেশের সুন্দরবন, কক্সবাজার এবং দেশের ঐতিহ্যবাহী বিভিন্নস্থান পরিদর্শন করেন। তিনি জানান বিশ্বের প্রায় ৯৭টি দেশ ভ্রমণ করেছেন। কিন্তু বাংলাদেশের মতো এমন বন্ধুপ্রতিম দেশ কোথাও পাননি। বাংলাদেশের জনগণের আন্তরিকতার ব্যাপক প্রশংসা করেন । বাংলাদেশের মানুষ দরিদ্র হলেও তারা খুবই বন্ধু সুলভ। বাংলাদেশ পর্যটন শিল্পের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের খাদ্যের দামও কম। তাছাড়া এখানে নিরাপত্তাও অনেক ভালো। তিনি রাশিয়ার পর্যটন প্রেমিদের জন্য বাংলাদেশ একটি আদর্শ জায়গা হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন। যেহেতু বর্তমানে রাশিয়ার নাগরিকদের ইউরোপ ভ্রমণে বিধি নিষেধ রয়েছে তাই এশিয়ার মধ্যে বাংলদেশ হতে পারে রাশিয়ানদের জন্য পর্যটনের অন্যতম স্থান। তিনি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্যের প্রশংসা করে বলেন, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা থেকেও ভ্রমনের জন্য বাংলাদেশ আদর্শ জায়গা। বিশেষ করে সুন্দরবনের সৌন্দর্য বর্ণনা করার মতো নয়। অন্যান্য দেশের বনগুলো অনেকটা কৃত্রিম। সেই দেশগুলো অনেকটা চিড়িখানার মতো। কিন্তু সুন্দরবন পরিপূর্ণ প্রাকৃতিক অনুভূতি পাওয়া যায়। যা অনেকটা আমাজন বনের মতো।
তিনি বাংলাদেশের পর্যটনের সমস্যা নিয়েও কথা বলেছেন । তিনি বলেন, কক্সবাজার বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমুদ্র সৈকত। আমার মনে হয় সেখানে উন্নয়নের অনেক সুযোগ এখনো রয়েছে। কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতের অবকাঠামোগত উন্নয়নের দিয়ে নজর দেয়া যেতে পারে। তাছাড়া রাশিয়ার সাথে সরাসরি বাংলাদেশ বিমান চলাচলের ব্যবস্থা নেই। যদি সরাসরি বাংলাদেশের সাথে রাশিয়ার বিমান চলাচলের ব্যবস্থা করা হয় সেক্ষেত্রে পর্যটনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তবে বাংলাদেশের পর্যটনের সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের পরিচিতি না থাকা। রাশিয়ার অনেক পর্যটকই জানেনা বাংলাদেশ সম্পর্কে। বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পরিচত করার জন্য বাংলাদেশের মন্ত্রণালয়ের যথেষ্ট কাজ করার সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের ইতিবাচক দিক গুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরতে হবে।
রাশিয়ায় গিয়ে বাংলাদেশ ভ্রমণের জন্য কাজ করবেন বলে জানান তিনি। আগামীতে তার পরিবারসহ এক মাসের জন্য বাংলাদেশে ভ্রমণ করবেন বলে জানান জর্জি জ্যোতভ। তিনি তার ভ্রমণের সার্বিক সহযোগিতার জন্য গ্লোবাল এক্সপ্লোর লি.কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।