মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাকস্বাধীনতা ও মানবাধিকারের প্রশ্নে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে তুর্কি ছাত্রী রুমেসা ওজতুর্কের গ্রেফতার। টাফ্টস বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থীকে ‘ফিলিস্তিনপন্থি’ দৃষ্টিভঙ্গির জন্য ট্রাম্প প্রশাসন আটক করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মিডল ইস্ট মনিটরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ ঘটনায় মার্কিন ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারা তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) ট্রাম্পের মন্ত্রিসভার শীর্ষ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে লেখা এক চিঠিতে ৩০ জনেরও বেশি ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতা রুমেসার গ্রেফতারকে ‘রাজনৈতিক দমনমূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তারা উল্লেখ করেছেন, রাজনৈতিক মত প্রকাশের কারণে একজন শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পরিপন্থী। এই গ্রেফতারের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তারা এ বিষয়ে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি করেছেন।
চিঠিটি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সচিব ক্রিস্টি নয়েম এবং মার্কিন অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক টড লিয়ন্সকে পাঠানো হয়েছে। স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে স্বতন্ত্র সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স, ডেমোক্র্যাট সিনেটর টিনা স্মিথ, পিটার ওয়েলচ, ক্রিস ভ্যান হোলেন, এলিজাবেথ ওয়ারেন এবং জেফ্রি মার্কলেসসহ বেশ কয়েকজন সিনেটর রয়েছেন।
ডেমোক্র্যাটিক কংগ্রেসওম্যান আয়ান্না প্রেসলি রুমেসার গ্রেফতারকে ‘ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘন’ আখ্যা দিয়েছেন এবং তাকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘এই গ্রেফতার শুধু ব্যক্তিগত স্বাধীনতার ওপর আঘাত নয়, বরং বাকস্বাধীনতার সাংবিধানিক অধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন।’’
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ওজতুর্কের গ্রেফতার শুধু তার ব্যক্তিগত স্বাধীনতাকে সীমাবদ্ধ করছে না, বরং এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর এক ধরনের হুমকি সৃষ্টি করছে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ ও প্রতিবাদ দেখা দিয়েছে। রাজনৈতিক ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
এখন প্রশ্ন উঠছে, যুক্তরাষ্ট্রের মতো গণতান্ত্রিক দেশে এ ধরনের পদক্ষেপ কতটা গ্রহণযোগ্য? মানবাধিকারের প্রতি দায়বদ্ধ দেশ হিসেবে এই ইস্যুতে ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থান কী হবে, তা নিয়ে বিশ্ববাসীর নজর রয়েছে।