জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের নাতি বাবুল কাজী (৫৯) মারা গেছেন। রোববার বিকেল সাড়ে ৫টায় ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক ডা. শাওন বিন রহমান জানান, “বাবুল কাজী ভেন্টিলেশনে ছিলেন। বিকালে তার ইসিজি ফ্ল্যাট হয়ে যায় এবং পালস বন্ধ হয়ে যায়। বিকেল সাড়ে ৫টায় তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।”
বাবুল কাজীর বড় বোন খিলখিল কাজী কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, “আমার ভাইটা অনেক কষ্ট পেয়ে চলে গেল। তার জন্য দোয়া করবেন।”
শনিবার ভোরে রাজধানীর বনানীর বাসায় দুর্ঘটনায় গুরুতর দগ্ধ হন বাবুল কাজী। বাথরুমে লাইটার জ্বালানোর সময় গ্যাস জমে থাকা অবস্থায় বিস্ফোরণ ঘটে। এতে তার শরীরের ৭৪ শতাংশ পুড়ে যায়। শ্বাসনালীও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় সকাল পৌনে ৭টায় তাকে বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।
শনিবার ভর্তির পরপরই চিকিৎসায় ১৯ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। তবে সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে রোববার বিকালে বাবুল কাজী শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
বাবুল কাজী ছিলেন কাজী নজরুল ইসলামের ছেলে কাজী সব্যসাচী ও উমা কাজীর তিন সন্তানের মধ্যে সবার ছোট। তার বড় দুই বোন খিলখিল কাজী ও মিষ্টি কাজী।
বাবুল কাজীর মরদেহ রোববার রাতে গুলশানের আজাদ মসজিদে গোসল করানো হবে। পরে ফ্রিজিং গাড়িতে মরদেহ রাখা হবে। সোমবার বনানী সোসাইটি মসজিদে জানাজার পর তাকে বনানী কবরস্থানে তার মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হবে বলে জানিয়েছেন খিলখিল কাজী।
কাজী নজরুল ইসলামের চার সন্তানের মধ্যে বড় দুই সন্তান অল্প বয়সে মারা যান। অপর দুই ছেলে কাজী সব্যসাচী ও কাজী অনিরুদ্ধ দীর্ঘায়ু পাননি। কাজী অনিরুদ্ধের পরিবার বর্তমানে কলকাতায় বসবাস করছেন। তার স্ত্রী কল্যাণী কাজী একজন সংগীতশিল্পী। তাদের তিন সন্তানের মধ্যে কাজী অনির্বাণ গত বছর সুইজারল্যান্ডে বেড়াতে গিয়ে মারা যান।
কবির নাতি বাবুল কাজীর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে নজরুল পরিবারের ওপর। তাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সবাই বাবুল কাজীর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেছেন।