২০২৪ সালে, এক অপ্রত্যাশিত অথচ চমকপ্রদ ঘটনা ঘটেছে—কোকোয়া, চকলেট তৈরির প্রধান উপাদান, দামে এতটা বৃদ্ধি পেয়েছে যে তা বিটকয়েনকে পেছনে ফেলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বৃদ্ধির পেছনে মূল কারণ জলবায়ু পরিবর্তন এবং আন্তর্জাতিক উত্তেজনা। ২০২৪ সালে কোকোয়ার দাম প্রায় ২০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বিটকয়েনের ১২৮ শতাংশ মূল্য বৃদ্ধির চেয়েও অনেক বেশি।
ব্লুমবার্গের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের শুরুতে প্রতি টন কোকোয়ার দাম ছিল ৪ হাজার মার্কিন ডলার, কিন্তু বছরের শেষের দিকে তা প্রায় ১৩ হাজার মার্কিন ডলারে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। এর পেছনে রয়েছে পশ্চিম আফ্রিকার তীব্র তাপমাত্রা এবং মরুকরণ, যার ফলে দুই-তৃতীয়াংশ চাষযোগ্য জমি উৎপাদনের জন্য অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আইভোরি কোস্ট ও ঘানার মতো শীর্ষ কোকো উৎপাদনকারী দেশগুলোতে ফলন তীব্রভাবে কমে গেছে, যা সরবরাহ সংকট তৈরি করেছে।
এছাড়াও, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে, যা কোকোয়ার উৎপাদনে আরও সমস্যা সৃষ্টি করেছে। যদিও মার্কিন আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী এল নিনো চক্র শেষ হয়ে লা নিনা শুরু হলে কোকোয়ার ফলন পুনরুদ্ধার হতে পারে।
অন্যদিকে, বিটকয়েনের দামও ২০২৪ সালে ১২৮ শতাংশ বেড়েছে, তবে এটি কোকোয়ার উত্থানের তুলনায় সামান্য কম। বিটকয়েনের দাম এক সময় ১ লাখ মার্কিন ডলার অতিক্রম করেছিল, তবে বিশ্লেষকরা বিশ্বাস করছেন ২০৩০ সালের মধ্যে বিটকয়েনের দাম ১০ লাখ মার্কিন ডলারে পৌঁছাতে পারে।
এই অদ্ভুত বাজার পরিস্থিতিতে কোকোয়া এবং বিটকয়েন উভয়ের দাম বৃদ্ধির ধারা সামনে আরও কৌতূহল সৃষ্টি করছে, যেখানে কোকোয়ার ভবিষ্যত অনেকাংশে জলবায়ু পরিবর্তন এবং আন্তর্জাতিক সংকটের ওপর নির্ভর করবে।