তথ্যপ্রযুক্তি খাত থেকে ৪৫ বিলিয়ন বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য নিয়ে সরকার যখন নিজেদের পরিকল্পনা সাজাচ্ছে ঠিক দখন এই পথে বাধ সাধছে জাতিসংঘ অনুমোদিত স্বায়ত্তশাসিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। চলতি অর্থবছর শেষ এই খাতের ২৭টি ডিজিটাল পরিষেবা খাতে বিদ্যমান কর অব্যাহতির মেয়াদ না বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি।
রোববার (২৮ এপ্রিল) আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনে দিনব্যাপী আয়কর, মূসক ও শুল্ক অনুবিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে এই পরামর্শ দিয়েছে আইএমএফের প্রতিনিধিদল।
বৈঠকে উপস্থিত নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, খাত সংশ্লিষ্টদের পক্ষে এ খাতে কর অবকাশ ২০৩০ সাল পর্যন্ত বাড়াতে সম্প্রতি এনবিআরকে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের চিঠির বিষয়টিও আলোচনায় আসে। চিঠির সূত্র ধরে বলা হয়েছে, কর অব্যাহতি তুলে দিলে এ খাতের ক্রমবর্ধমান বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে খা। কিন্তু সম্ভাবনাময় এই বিকাশকে আমলে নেয়নি আইএমএফ। এমন পরিস্থিতে সার্বিক দিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে আইএমএফ কর্মকর্তাদের জানিয়েছে এনবিআর।
সূত্রমতে, বৈঠকে এনবিআর চেয়ারম্যান ছাড়াও তিন বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তা ও আইএমএফের ৬ জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে আইএমএফ মিশনের পক্ষ থেকে আগামী তিন বছরের মধ্য যাবতীয় কর অব্যাহতি তুলে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে এনবিআর কর্মকর্তারা তথ্য প্রযুক্তিখাতের সামগ্রিক চিত্র ও বর্তমান অবস্থা তুলে ধরেন। কর অব্যাহতি থাকার ফলে এ খাতের উত্থান হয়েছে এবং বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তা অব্যাহত থাকা প্রয়োজন বলে জানান। তবে এ বিষয়ে একমত হয়নি আইএমএফ মিশন।
সূত্র আরও জানায়, যে কোন সেবার বিপরীতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট কার্যকর করার বিষয় আলোচনায় উঠে এসেছে। পোশাক, ফুটওয়্যার, এলপিজি, মোবাইল ফোন ও অন্যান্য খাত কর অবকাশ থেকে সরানোর পরামর্শ দিয়েছে আইএমএফ। এছাড়া পেট্রোবাংলার কাছ থেকে পাওনা টাকা আদায়, অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় করা যায় কি না তা জানতে চেয়েছে আইএমএফ। পাশাপাশি তিনটি অনুবিভাগে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের কথা বলেছে সংস্থাটি।
প্রসঙ্গত, আগামী ৮ মে পর্যন্ত আইএমএফের দলটি সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে বৈঠক করবে।
এদিকে, ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ অনুমোদন করে আইএমএফ। সে সময় রাজস্ব বৃদ্ধি, ব্যাংক খাত সংস্কারসহ বিভিন্ন শর্ত দেয় সংস্থাটি। ইতিমধ্যে দুই কিস্তিতে ১০০ কোটি ডলারের বেশি অর্থ ছাড় করেছে। তৃতীয় কিস্তির অর্থ পাওয়ার কথা আগামী মাসের শেষ দিকে।