বিদেশি আয়ের চেয়ে ব্যয় কমায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার চলতি হিসাবের ঘাটতি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বৈদেশিক মুদ্রার চলতি হিসাবের ঘাটতি ছিল ১ লাখ ৮ হাজার ৫৫৯ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৬৯ হাজার ৮৮১ কোটি টাকায়। এক বছরের ব্যবধানে এ ঘাটতি ৩৮ হাজার ৬৭৮ কোটি টাকা বা ৩৫.৬ শতাংশ কমেছে।
২০১৫ সাল থেকে বৈদেশিক মুদ্রার চলতি হিসাবে ঘাটতি বিরাজমান ছিল। ২০২২ ও ২০২৩ সালে এ সংকট তীব্র আকার ধারণ করে। তবে, নতুন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর ব্যাংক খাতে লুটপাট ও অর্থপাচার কমায় ডলারের প্রবাহ বৃদ্ধি পায়। এতে রেমিটেন্স ও রপ্তানি আয় বাড়ে এবং বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, দেশের বৈদেশিক বাণিজ্য ঘাটতি এক বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ৭.৯ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এ খাতে ঘাটতি ছিল ২ লাখ ৪৯ হাজার ৩২৩ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরে বেড়ে হয়েছে ২ লাখ ৭০ হাজার ৭২৪ কোটি টাকা। ডলার সংকটের সময় আমদানি নিয়ন্ত্রণের ফলে ঘাটতি কমলেও নতুন সরকারের শাসনামলে আমদানিতে শিথিলতা আনা হয়, যা বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ার অন্যতম কারণ।
সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ কিছুটা কমলেও রেমিটেন্স ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধির ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক আশা করছে, চলতি অর্থবছরে ঘাটতি আরও কমবে এবং রিজার্ভের স্থিতি আরও শক্তিশালী হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অর্থনীতির টেকসই উন্নয়নের জন্য বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি কমিয়ে রিজার্ভ বৃদ্ধির এ ধারা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।