ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের শিক্ষার্থীরা শনিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুর ১২টায় বঙ্গবন্ধুর গ্রাফিতিতে জুতা ও রঙ নিক্ষেপ কর্মসূচি পালন করেছে। এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয় ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে, যেখানে শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের নির্যাতন ও ফ্যাসিবাদের প্রতি প্রতীকী নিন্দা জানান।
এসময় শিক্ষার্থীরা নানা স্লোগান দিয়ে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, ‘‘মুজিববাদ মুর্দাবাদ, ইনকিলাব জিন্দাবাদ’’ এবং ‘‘আমার সোনার বাংলায়, মুজিববাদের ঠাই নাই, স্বৈচারের ঠাই নাই’’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
শিক্ষার্থী আহমেদ আল সাবাহ জানান, ‘‘মেট্রোরেলের পিলারে ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনা আর তার বাপ, দেশের প্রথম ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার শেখ মুজিবুরের দুইটা গ্রাফিতি ছিল, যেগুলোকে ছাত্র জনতা জুতার মালা আর কাদা ছুড়ে ঘৃণাস্তম্ভে পরিণত করে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ফ্যাসিবাদী শক্তি গোপনে আমাদের সেই স্মৃতি মুছে দেয়, তবে মুজিবেরটা পুরোপুরি মুছে দেওয়া হয়।’’ এই প্রেক্ষিতে, ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ফ্যাসিবাদের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন করতে তারা এই কর্মসূচি পালন করেছেন।
শিক্ষার্থী গোলাম কিবরিয়া অপু বলেন, ‘‘আজকে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। আমরা আজকের এই দিনটি বেছে নিয়েছি কারণ ছাত্রলীগের নির্যাতনের ফলে আমাদের শিক্ষাজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘প্রত্যেকদিন ৭-৮ ঘণ্টা সময় তাবেদারি করতে হতো। মুজিববাদের তাবেদারি করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম, যা আমাদের পড়াশোনায় বাধা সৃষ্টি করত। ছাত্রলীগের নির্মম নির্যাতনের ফলেই এই কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে।’’
সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, ‘‘গ্রাফিতিতে জুতা নিক্ষেপের মাধ্যমে আমরা ফ্যাসিস্ট শক্তির প্রতি জনগণের ক্ষোভ প্রকাশ করতে চাই। শেখ মুজিব বাংলাদেশের প্রথম ফ্যাসিস্ট। গণতন্ত্রকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বাকশাল কায়েম করেছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ আমাদের শিক্ষা জীবনকে শেষ করে দিয়েছে। আমরা চাই না, ভবিষ্যতে শেখ মুজিব বা তার দোসরদের মতো আর কোনো ফ্যাসিস্ট ক্ষমতায় আসুক।’’
এই কর্মসূচির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা একটি বার্তা দিতে চান—তারা ছাত্রলীগের প্রতি নিজেদের ঘৃণা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছে এবং ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করছে।