দেশ থেকে অর্থপাচারের ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ৮০ শতাংশের বেশি পাচারের ঘটনা ঘটছে ব্যবসায়িক চ্যানেল ব্যবহার করে। ব্যাংকারদের অসহযোগিতা থাকলেও ১৭ টি তথ্য প্রদানকারী সংস্থার সহায়তায় আগের বছরের চেয়ে ৬৫ শতাংশ বেশি সন্দেহজনক লেনদেন শনাক্ত হয়েছে।
অর্থপাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধের কেন্দ্রীয় সংস্থা বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) ২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকে বিএফআইইউর সংবাদ সম্মেলনে মঙ্গলবার এ প্রতিবেদনের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। এতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএফআইইউর প্রধান মাসুদ বিশ্বাস।
প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, গেল ২০২২-২৩ অর্থবছরে সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে ১৪ হাজার ১০৬টি। এক বছরে সন্দেহজনক লেনদেন বেড়েছে ৬৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ বা ৫ হাজার ৫৩৫টি। ২০২১-২২ অর্থবছরে এই সংখ্যা ছিল ৮ হাজার ৫৭১টি এবং ২০২০-২১ ছিল ৫ হাজার ২৮০টি।
এর আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে এমন লেনদেন ও কার্যক্রম হয়েছিল ৩ হাজার ৬৭৫টি। আর ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এমন লেনদেন ও কার্যক্রম হয়েছিল ৩ হাজার ৫৭৩টি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সব সন্দেহজনক লেনদেন (এসটিআর) অপরাধ নয়। লেনদেন সন্দেহজনক হলে তদন্ত করি। এরপর যদি কোনো অপরাধের তথ্য প্রমাণ মিলে তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিই।
বিএফআইইউর প্রধান মাসুদ বিশ্বাস বলেন, অর্থ পাচারের ৮০ শতাংশ হয় ব্যাংকের মাধ্যমে। ব্যাংক যদি এটি বন্ধে সহযোগিতা না করে তাহলে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। কারণ একবার মানি লন্ড্রারিং হয়ে গেলে তা ফেরত আনা যায় না।
তিনি জানান, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা ও সহযোগিতার জন্য ১০ দেশের সঙ্গে এমওইউর করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে বিএফআইইউর প্রধান বলেন, বিএফআইইউর তথ্যের ভিত্তিতে অর্থ পাচারের মামলা হয়েছে ৫৯টি। এর মধ্যে দুদক মামলা করেছে ৪৭টি, সিআইডির ১০টি এবং এনবিআরের বিশেষ সেল ২টি। এগুলো এখনো এখনো নিষ্পত্তি হয়নি।
বিএফআইইউর প্রতিবেদনে বলা হয়, পুরো অর্থবছরে সর্বোচ্চ ১২ হাজার ৮০৯টি সন্দেহজনক লেনদেনের রিপোর্ট জমা দিয়েছে ব্যাংকগুলো। তার আগের অর্থবছরে ৭ হাজার ৯৯৯টি রিপোর্ট জমা দিয়েছিল ব্যাংকগুলো। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো রিপোর্ট জমা দেয় ১২১টি। আর এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো ৯০০ রিপোর্ট জমা দিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএফআইইউ নির্বাহী পরিচালক রফিকুল ইসলাম, বৈদেশিক মুদ্রা ও নীতি বিভাগের পরিচালক সারোয়ার হোসেন, কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক সাঈদা খানম, অতিরিক্ত পরিচালক কামাল হোসাইন উপস্থিত ছিলেন।