খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) সব ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকবে বলে সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বুধবার অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৩তম সিন্ডিকেট সভায় ছাত্র রাজনীতি বন্ধের পূর্বঘোষণা কঠোরভাবে অনুসরণের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও, মঙ্গলবারের সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত বহিরাগতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সংঘর্ষে সরাসরি জড়িত শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। সংঘর্ষের প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করতে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সংঘর্ষের পটভূমি মঙ্গলবার কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্রদল ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। দুপুর থেকে শুরু হওয়া পাল্টাপাল্টি ধাওয়া বিকাল পর্যন্ত চলে। সংঘর্ষে অন্তত ৬০ জন শিক্ষার্থী আহত হন, যাদের মধ্যে ১০ জনকে গুরুতর অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, মঙ্গলবার সকাল থেকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা সংগঠনের নতুন সদস্য অন্তর্ভুক্তির জন্য ফরম বিতরণ শুরু করেন। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে এবং প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে ‘ছাত্র রাজনীতির ঠিকানা, এই কুয়েটে হবে না’, ‘রাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাস চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেয়। মিছিলটি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে পৌঁছালে ছাত্রদল সমর্থিতদের সঙ্গে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং একপর্যায়ে সংঘর্ষে রূপ নেয়। এতে উভয়পক্ষের অর্ধশতাধিক আহত হন এবং সংঘর্ষ ক্যাম্পাসের বাইরে পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।
বহিরাগত ও রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা সংঘর্ষের সময় ছাত্রদলের সঙ্গে বহিরাগতদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদেরও দেখা গেছে বলে জানা গেছে। সংঘর্ষের সময় যুবদল নেতা মাহবুবুর রহমানকে রামদা হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়, যার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি তাকে বহিষ্কার করে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পদক্ষেপ সিন্ডিকেট সভায় কুয়েট ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ রাখার সিদ্ধান্ত পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ ধরনের কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষা করতে প্রশাসন সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।